কম্পিউটেড টমোগ্রাফি স্ক্যান সংক্ষেপে সিটি স্ক্যান নামে পরিচিত। এটি এক প্রকার এক্স-রে। তবে তফাত হচ্ছে এক্স-রে এর মত একটি ছবি নেয়া হয় না। এক্স-রে টিউবের আবর্তনের মাধ্যমে অসংখ্য ছবি নেয়া হয়। অনেকটা শরীর টুকরো করে প্রস্থচ্ছেদের ছবি নেয়ার মত। পরে ছবিগুলো কম্পিউটারে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে একত্র করা হয়।
সিটি স্ক্যান করার মাধ্যমে শরীরের ভেতরের নিখুঁত ছবি পাওয়া যায়। ফলে বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষাটি সহায়ক হয়।
ক্যান্সার বা টিউমার নির্ণয়,
মস্তিষ্কের রোগ বা মস্তিষ্কে নক্তক্ষরণ হয়েছে কিনা নির্ণয়,
হৃদযন্ত্রের কোন রোগ বা রক্ত প্রবাহে কোন বাধা রয়েছে কিনা জানতে,
ফুসফুসের রোগ নির্ণয়,
হাড় ভাঙ্গা বা অন্য কোন সমস্যা নির্ণয়,
কিডনী বা মূত্রসংবহন তন্ত্রের কোন রোগ বা পাথর সনাক্ত করণ,
পিত্তথলি, লিভার বা অগ্নাশয়ের রোগ নির্ণয়,
বায়োপসি করার ক্ষেত্রে গাইড হিসেবে সিটি স্ক্যানের সাহায্য নেয়া হয়,
ক্যান্সার রোগীর ক্যান্সারের বিস্তৃতি সম্পর্কে জানতে সিটি স্ক্যান করা হয়,
এছাড়া যেসব রোগীকে পেস মেকার, ভাল্ভ বা এ জাতীয় যন্ত্র দেয়া হয়েছে তাদের এমআরআই করা যায় না, এ কারণে সিটি স্ক্যান করতে হয়।
সিটি স্ক্যান ব্যাথামুক্ত পরীক্ষা। সিটি স্ক্যান টেবিলে রোগীকে শুইয়ে টেবিলটি বৃত্তাকার একটি স্ক্যানারের মধ্যে নেয়া হয়, যেখানে এক্স-রে টিউব ও সেন্সর থাকে। টিউব ও সেন্সর দ্রুত ঘুরতে থাকে, তবে এটি বাইরে থেকে দেখা যায় না। ভালো ছবি পাওয়ার জন্য কন্ট্রাস্ট ম্যাটেরিয়াল দরকার হতে পারে। এটা ইনজেকশন হিসেবে শিরায় দেয়া হতে পারে আবার রোগীকে পান করতেও দেয়া হতে পারে।
যেহেতু কন্ট্রাস্ট ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়, কাজেই এলার্জি থাকলে সেটা আগে থেকে জানানো উচিত।
গর্ভাবস্থায় সিটি স্ক্যান ক্ষতিকর হতে পারে। চিকিৎসককে এ বিষয়ে অবহিত করা উচিত।
পেটের সিটি স্ক্যান করাতে হলে খালি পেটে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
ধাতব গয়না, হিয়ারিং এইড বা এ জাতীয় বস্তু সিটি স্ক্যানে বাধা দেয়।
পরিধেয় খুলে বিশেষ গাউন পরে স্ক্যান করা প্রয়োজন হতে পারে।
সিটি স্ক্যান করার সময় নড়াচড়া করা যায় না। কেউ নার্ভাস হয়ে পড়লে সিডেটিভ জাতীয় ওষুধ বা শিশুদের ক্ষেত্রে ঘুমের ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে।